সবার উপর আল্লাহর অশেষ
রহমত ও শান্তি বর্ষিত হক। কিছু দিন আগে একটা পোস্টে লিখেছিলাম যে সময় পেলে ব্লগার
বা ব্লগস্পটের উপর একটা টিউটোরিয়াল লেখব। কিন্তু সময় করে উঠতে পারছিলাম না। আমাদের
মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ব্লগিং করতে চান। কিন্তু কিভাবে শুরু করবেন তা বুঝেউঠতে
পারছেন না। তাদের জন্যই আমার এই টিউটোরিয়াল। ব্লগার বা ব্লগস্পট টিউটোরিয়াল টি
করতে ভালভাবে বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই প্রতিটি পর্ব পড়ার সাথে সাথে তা চর্চা করতে
হবে। কারন আমার এই টিউটোরিয়াল এর সাথে সাথে চর্চা করলে আপনার একটি ব্লগ খোলা হয়ে
যাবে। আর সমস্যা হলে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারবেন। অনেকেই ভাবে যে মোবাইল দিয়ে কি
ব্লগস্পট সাইট চালান যায়। আমি বলি যায়। তবে কম্পিউটারে বেস্ট।
টিউটোরিয়াল শুরু করার আগে
কয়েকটা বিষয়ে পরিষ্কার ধারনা থাকা দরকার।
২. ফ্রি তে
ব্লগিং করা যায় কি
৩. ব্লগার বা ব্লগস্পট
কেন?
৪. ব্লগিং করে আয় করা যায় কি
আমরা কম বেশি সবাই ব্লগ বা ওয়েব ব্লগ শব্দটির সাথে পরিচিত। যারা ভাবছেন “ব্লগ” এটা আবার কি? তাদের জন্য ব্লগ হচ্ছে বিশেষ ধরনের ওয়েব সাইট্, অনেকে একে ব্যাক্তিগত ডায়রীও বলে থাকে। তবে সময়ের সাথে ব্লগিং এর ধারাতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন ব্যাক্তিগত ডায়রীর পরিবর্তে ব্লগ একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ওয়েব সাইট থেকে ব্লগের মূল পার্থক্য হল ওয়েব সাইট আপডেট করা হয় অনিয়মিত ভাবে অপরদিকে ব্লগ আপডেট করা হয় নিয়মিত ভাবে। এমনকি কিছু কিছু ব্লগ প্রতি মিনিটে আপডেট করা হয়।
ইন্টারনেট জগতে “ব্লগ” এর বয়স দশ পার হয়েছে। Blog শব্দটির আবির্ভাব Weblog থেকে। Weblog শব্দটিসর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয় দশ বছর আগে ১৯৯৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর। শব্দটির স্রষ্ট্রা মার্কিন নাগরিক জন বার্জার। এর ঠিক দু’বছর পর ১৯৯৯ সালের এপ্রিল এবং মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে পিটার মহোলজ নামে একব্যাক্তি Weblog শব্দটিকে ভেঙ্গে দুই ভাগ করেন- We Blog এর পরই সারা বিশ্বব্যাপী ব্লগ জনপ্রিয় হতে শুরু করে। তবে মাঝামাঝি সময়ে আরেকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। তা হল অনলাইনে দিনলিপি লেখার সুবিধা নিয়ে যাত্রা শুরু করে ‘ওপেন ডায়েরি’ যা ছিল অনেকটা এখনকার ব্লগের মতোই। যারা ব্লগে পোস্ট দেয় তাদেরকে ব্লগার বলা হয়।
২০০৬ সালের প্রথম মাস থেকে শুর হয় বাংলা ব্লগিং এর ইতিহাস। প্রথমে একটি বাংলা ব্লগিংসাইট তার যাত্র শুরু করার পরপরই আরও একাধিক সাইট অনলাইনে বাংলা ব্লগিং এর সুবিধা নিয়ে উপস্থিত হয়। এখন বেশ কয়েকটি ব্লগিং সাইট বাংলাভাষী অনলাইন ব্যবহারকারীদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে। কয়েক বছর পার হবার পরও এদের কেউ কেউ তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেনি, কেউ জনপ্রিয় হবার চেষ্টা করছে, আবার কেউবা নতুন শুরু করে জনপ্রিয়তা অর্জনের লড়াইয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রণ করছে।
কোন ব্লগে কি ধরনের পোস্ট দেওয়া হয় তার উপর ভিত্তি করে ব্লগকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকটি হল:
এখানে ব্যাক্তি কোন একটি বিষয়ের উপর তার মতামত পোষ্ট আকারে তুলে ধরেন এবং পাঠকদের সাথে এর উপর মতামত আদান প্রদান করেন। এই ধরনের ব্লগে সাধারনত কোন ব্যক্তি তার প্রতিদিনের জীবন যাত্রা এবং তার নিজস্ব মতামত প্রকাশ করে। ব্যক্তিগত ব্লগ বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয়। এ ধরণের ব্লগ ব্লগার তার নিজের শখ থেকে করে থাকে।
সামাজিক ব্লগ হল এমন ব্লগ সাইট যেখানে বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের মতামত বা মুক্ত চিন্তা তুলে ধরতে পারে। একজন ব্যক্তি একটি পোষ্ট দেবার পর উক্ত ব্লগের অন্যান্য ব্লগাররা তার পোষ্টর উপর মন্তব্য করতে পারে। যেমন- সামহয়্যারইন ব্লগ, আমার ব্লগ ইত্যাদি সামাজিক ব্লগের অন্তর্ভূক্ত।
কোম্পানী/ প্রতিষ্ঠান তাদের কোন পন্য বা সেবার উপর নতুন নতুন তথ্য প্রদান করেন এবং পাঠক তাদের মতামত প্রদান করতে পারেন। এ ধরনের ব্লগ সাধারণত কোন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান তাদের পন্যের প্রচার বা গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার্থে করে থাকে। যেমন- গুগল ব্লগ, অপেরা ডেস্কটপ টিম ইত্যাদি।
প্রশ্ন ব্লগে ব্লগার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকেন। এই প্রশ্ন কোন ফর্ম বা ই-মেইলের মাধম্যে ব্লগাদের কাছে পৌছান হয়। যেমন: ইয়াহু এনসার হল প্রশ্ন ব্লগ।
যে সকল ব্লগে বিভিন্ন সা¤প্রতিক খবরের উপর বিশ্লেষন স্থান পায় তাদেরকে খবর ব্লগ বা News Blog বলে।
ফ্রি তে ব্লগিং করা যায় কি
অনেক বন্ধুই আমাকে এই প্রশ্নটি করে থাকেন কিভবে ফ্রি ব্লগ তৈরি করা যায়। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আপনাদের সামনে এই শিরোনামের পোস্টটি লিখছি।
অনেক বাংলাদেশী রয়েছেন যারা অনলাইনে লিখালিখি পছন্দ করেন কিন্তু অর্থের অভাবে ব্লগ তৈরি করতে পারেননা কিন্তু মানুষের চাহিদা কি অপূর্ণ থাকে ? ব্লগারদের কল্যানে বিভিন্ন সংস্থা ফ্রি ব্লগ লিখার জায়গা দিচ্ছে আজ তেমনি কিছু প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে জানবো।
প্রথমেই ব্লগার ডট কম এর ব্যাপারে লিখতে চাই কারন এটি একটি বৃহৎ ব্লগিং প্লাটফর্ম যার প্রতিষ্ঠাতা গুগল, যেখানে আপনি সম্পূর্ণ ফ্রিতে ব্লগ লিখার জায়গা পাবেন। এখানে ব্লগ নিতে হলে প্রথমে আপনাকে একটি জিমেইল একাউন্ট খুলতে হবে অতঃপর ব্লগার ডট কম থেকে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্য করতে হবে। আপনার নিবন্ধন হয়ে গেলে আপনি পছন্দমতো রঙ ব্যাবহার করে এটিকে সাজিয়ে নিতে পারবেন ।
“blogger.com” এ ব্লগিং করার পূর্বে তাদের নীতিমালা সম্পর্কে ধারনা থাকা ভাল । তাই পূর্বেই তাদের নিতিমালার পাতাটি পড়ুন
৩. ব্লগার বা ব্লগস্পট কেন?
এ পর্যায়ে আমরা আলোচনা করব, ওয়েবে এত ব্লগিং সেবা থাকতে, আমরা কেন ব্লগার'কে বেছে নেব। কারন
এটি ব্যাবহার করা অত্যন্ত সহজ। ওয়ার্ডপ্রেসের মত অপশন বাহুল্যতা নেই। খুব সহজে এটি ব্যাবহার ও পরিচালনা করা যায়। পোস্ট করা যায় অত্যন্ত সহজ নিয়মে।
আপনার একটি জিমেইল বা গুগল অ্যাকাউন্ট থেকেই আপনি ব্লগার-এ ব্লগ খুলতে পারবেন।
আপনি যদি একজন নবীন ব্লগার বা ওয়েব ডেভেলপার হন, তাহলে আপনার জন্য ব্লগার অবশ্যই সেরা প্ল্যাটফর্ম। কারন এখানে ধীরে ধীরে আপনার দক্ষতা বৃদ্ধির যথেষ্ঠ সুযোগ রয়েছে।
ব্লগার-এ আপনি সরাসরি টেমপ্লেট বা থিম এডিট করতে পারবেন। এর ফলে সহজেই খুঁটিনাটি কাজ করা যায় ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়। তাই ওয়ার্ডপ্রেসে যাওয়ার আগে ব্লগার-এ থেকে কোডিং নিয়ে নাড়াচাড়াটা শিখে ফেলুন আগে। দারুণ কাজে দেবে। ব্লগের উপর সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রন থাকে আপনার, ফলে যা খুশী তা করতে পারবেন এখানে যদি কাজটা জানা থাকে।
আপনি যদি ব্যাক্তিগত ব্লগ খুলতে চান, তাহলে ব্লগার আপনার জন্য উৎকৃষ্ঠ প্ল্যাটফর্ম। কেননা, এখানে ব্যাক্তিগত ব্লগের জন্য অফিসিয়াল দৃষ্টিনন্দন টেমপ্লেট ছাড়াও, ইন্টারনেটে অসংখ্য নান্দনিক টেমপ্ল্যাট রয়েছে, যার সিংহভাগই বিনামূল্যে! বিশ্বের অধিকাংশ ব্যাক্তিগত ব্লগ ব্লগার দ্বারা তৈরী।
ব্লগার গুগলের নিজস্ব কোম্পানি হওয়ায়, এর এসইও রেজাল্ট অসাধারণ! কারন গুগল এটিকে ডিফল্টভাবে সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করে রেখেছে। খুব কম সময়ে ও পরিশ্রমে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্টে অভূতপূর্ব ফলাফল পাওয়া যায়।
ব্লগার-এ হোস্ট করা (নিবন্ধিত) ব্লগসমূহ গুগলের নিজস্ব সার্ভার থেকে পরিচালিত হওয়ায়, এগুলো লোড হওয়ার গতি তুলনামূলকভাবে যথেষ্ঠ ভালো।
বলা হয়ে থাকে, ব্লগারে নাকি রিচ ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হয় না। কিন্তু এখন বহু টেমপ্লেট ও প্রিমিয়াম ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে ব্লগারে যে তথ্যটিকে ভুল প্রমান করছে। সুতরাং, আপনার যদি দক্ষতা থাকে, সেটা ব্লগারে কাজে লাগানোর যথেষ্ঠ সুযোগ আছে আপনার জন্য।
আরেকটি বিশাল ব্যাপার হচ্ছে, ইন্টারনেটে বিনামূল্যে এখন হাজার হাজার নান্দনিক কাস্টম টেমপ্লেট পাওয়া যায়, যেটি দিয়ে আপনি নিজের মত করে ব্লগের ডিজাইন করতে পারবেন।
যেকোন সমস্যার সমাধান গুগলে সার্চ করে নিজে নিজেই করতে পারবেন। আমাদের মত বহু ব্লগার হেল্প ফোরাম ধরণের ওয়েবসাইট আছে ইন্টারনেটে এখন, যাদের মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার সমস্যার কাঙ্খিত সমাধানটি পেয়ে যাবেন।
স্মার্টফোনের জন্য রয়েছে ব্লগারের বিশেষায়িত অ্যাপ্লিকেশন, যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার অ্যান্ড্রয়েড, আইফোন থেকে পোস্ট করতে পারবেন।
৪. ব্লগিং করে আয় করা যায় কি
অনলাইনে অর্থ উপার্জন এখন আর নতুন কোন বিষয় নয়। প্রযুক্তির প্রসারতা ও দক্ষ প্রযুক্তিবিদদের আন্তরিক সহায়তার কারনে আজ অনেক বেকার স্বাবলম্বী । হা! এখন অনেকেই ব্লগিং করছে এবং ব্লগিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে । ব্লগিং করার সুবিধা হল একবার আয় শুরু হলে অল্প পরিশ্রমে অধিক আয় করা যায় । কি ভাই আপনিও ব্লগিং করতে চান নাকি? যদি আপনার উত্তর হ্যা হয় এবং আপনার যদি এই সম্পর্কে জ্ঞান কম থাকে তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য । আমি এই পোস্টের মাধ্যমে এই বিষয়ের মুল কথাগুলো তুলে ধরবো ।
আসলে ব্লগিং সম্বন্ধে ব্ললে সেস করা যাবে না।